প্রতিবেদন লিখনের বিবেচ্য বিষয়সমূহ
গবেষণা কাজের সর্বশেষ অথচ সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হলো প্রতিবেদন লিখন। একটি গবেষণার সাফল্য বা ব্যর্থতা নির্ভর করে গবেষণা প্রতিবেদন কতটা সুচারুরূপে প্রণয়ন করা হয়েছে তার উপর। এছাড়া আধুনিক বিশ্বের প্রতিটি আনুষ্ঠানিক নীতি, পরিকল্পনা ও কর্মসূচির অন্যতম ভিত্তি ও পূর্বশর্ত হিসেবে গবেষণা প্রতিবেদনের গুরুত্ব ও ভূমিকা অনস্বীকার্য।
প্রতিবেদন লিখনের বিবেচ্য বিষয়সমূহ
গবেষণা কাজের সর্বশেষ ধাপ হলো প্রতিবেদন লিখন। নিম্নে প্রতিবেদন লিখনের প্রধান বিবেচ্য বিয়ষগুলো উল্লেখ করা হলো:
১. উদ্দেশ্য নির্বাচন:
গবেষণা প্রতিবেদন প্রণয়নে গবেষকের প্রধান বিবেচ্য বিষয় হলো এটি কাদের উদ্দেশ্যে লেখা হবে তা নির্বাচন করা। যেমন- ছাত্রদের দ্বারা লিখিত গবেষণা প্রতিবেদন, থিসিস, অভিসন্দর্ভ ইত্যাদির উদ্দেশ্য থাকে কোনো উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করা। এর পাঠক থাকেন মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও পন্ডিত ব্যক্তিবর্গ। আবার সর্বস্তরের মানুষের জন্যও গবেষণা প্রতিবেদন প্রণয়ন করা হয়ে থাকে। এ ধরনের প্রতিবেদনের প্রকৃতি সহজ-সরল হয়।
২. পরিবেশিত তথ্যাদি নিরূপণ:
ছাত্র, বিজ্ঞানী বা সাধারণ মানুষ যাদের জন্যই গবেষণার প্রতিবেদন লেখা হোক না কেন প্রতিবেদন লেখার সময় গবেষককে এ তিনটি বিবেচনায় রাখতে হবে যে এতে কি ধরনের তথ্যাদি পরিবেশন করা প্রয়োজন। কেননা তথ্যাদি সময়োপযোগী না হলে গবেষণা প্রতিবেদন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়।
৩. উপস্থাপনের কৌশল নির্ধারণ:
প্রতিবেদন লিখনের গুরুত্বপূর্ণ একটি বিবেচ্য বিষয় হলো উপস্থাপনের কৌশল নির্ধারণ করা। প্রতিবেদন কিভাবে সাজানো বা উপস্থাপন করা যায় কিংবা কিভাবে এটি পাঠকের কাছে অধিক গ্রহণযোগ্য হবে তা অবশ্যই প্রতিবেদককে বিবেচনায় রাখতে হবে।
৪. নিবন্ধনকৃত সাময়িকীতে প্রকাশ:
মূলত গবেষণা প্রতিবেদন হলো গবেষণার খুঁটিনাটি সবকিছুর বিস্তারিত লিখিত বিবরণী। তবে গবেষক তার গবেষণাকর্মের বিস্তারিত বিবরণী লিপিবদ্ধ করলেই তা গবেষণার স্বীকৃত প্রতিবেদন হয় না। এক্ষেত্রে বিবেচ্য বিষয় হলো গবেষণার পূর্ণাঙ্গ বিবরণী অবশ্যই কোনো না কোনো নিবন্ধনকৃত সাময়িকীতে প্রকাশিত হতে হবে। যেকোনো ধরনের গবেষণাই হোক তা প্রবন্ধ আকারে সাময়িকীতে প্রকাশ করারও কতকগুলো বিধিবদ্ধ নিয়ম রয়েছে। আর এক্ষেত্রে প্রধান বিবেচ্য বিষয় হলো গবেষণাকর্মটি অবশ্যই মৌলিক হতে হবে। একই সাথে এক্ষেত্রে অবশ্য পালনীয় নিয়ম হলো বৈজ্ঞানিক নিয়ম।
উপসংহার:
উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, গবেষণা প্রতিবেদন পরীক্ষণের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ ও গবেষণার চূড়ান্ত ফল, গবেষকের লক্ষ্য এবং গবেষক ও পাঠকের মধ্যে সেতুস্বরূপ। পরীক্ষণ পরিচালনার পর পরীক্ষক প্রতিবেদন লেখার জন্য চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেন এবং পরীক্ষণ কার্য থেকে প্রাপ্ত ফলাফলের খুঁটিনাটি লিপিবদ্ধ করে রাখেন। যে পদ্ধতিতে গবেষক তার গবেষণার প্রতিবেদন জনসমক্ষে প্রকাশ করে তাই পরীক্ষণ প্রতিবেদন লিখন।