মনোদৈহিক বা মনোশারীরবৃত্তীয় বৈকল্য
মেডিক্যাল পেশাজীবীরা সাধারণত জৈবিক কারণসমূহ অনুধাবন ও নিয়ন্ত্রণের জন্য নানা গবেষণা পরিচালনা করে থাকেন। অন্যদিকে মনোবিকারের বিকাশে কোন কোন উপাদান দায়ী সেগুলো শনাক্ত করতে আগ্রহ প্রকাশ করে থাকেন। যেকোনো রোগ তা শারীরিক বা মানসিক যাই হোক না কেন তা ব্যক্তির সামগ্রিক অবস্থাকে প্রভাবিত করে। নিম্নে মনোদৈহিক বা মনোশারীরবৃত্তীয় বৈকল্য বর্ণনা করা হলো-
মনোদৈহিক বা মনোশারীরবৃত্তীয় বৈকল্য জীবনযাত্রার নানা পর্যায়ে এমন কতগুলো শারীরিক অসুস্থতা পরিলক্ষিত হয় যার কারণ হলো মানসিক পীড়ন, চাপ ও চিন্তন-বিশৃঙ্খলা; অর্থাৎ, মানসিক কারণে যখন কোনো সত্যিকার শারীরিক অসুস্থতা দেখা যায় তখন তাকে Psychophysiological disorder বলা হয়; যেমন: Hypertension, Asthma, Peptic Ulcer, ইত্যাদি। এই সব রোগের ক্ষেত্রে শারীরিক অসুস্থতা দেখা যায়; যার কারণ হিসেবে আবেগীয় অবস্থাকে দায়ী করা হয়। এই সকল রোগের চিকিৎসা পদ্ধতিকে ব্যাপকভাবে 'Behaviour Medicine' বলে। তবে শারীরিক অসুস্থতা সৃষ্টির ফলে মানসিক উপাদানসমূহের উপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়।
DSM III-R এর পূর্বে Psychogenic illness-কে 'Psychophysiological disorder-এর শ্রেণিতে ফেলা হতো। এরও আগে এটিকে 'Psychosomatic disorder' বলা হতো। কারণ এই Psychosomatic শব্দটির দ্বারাই মনোদৈহিক বৈকল্যকে সঠিকভাবে নির্দেশ করা সম্ভব। কারণ 'Psyche' শব্দের অর্থ 'মন' আর এই 'মন' যখন 'Soma' অর্থাৎ, শরীরের উপর প্রভাব বিস্তার করে তখনই মনোদৈহিক বৈকল্যের সৃষ্টি হয়। এই মন ও শরীর যদিও পরস্পর থেকে ভিন্ন তবুও তারা একে অপরের উপর প্রভাব বিস্তার করে। DSM III ও DSM IV-এ শ্রেণিবিভাগে এর নতুন নামকরণ করা হয়েছে 'Psychological factors affecting physical conditions.' অর্থাৎ, 'শারীরিক অবস্থায় প্রভাব বিস্তারকারী মানসিক উপাদান'।