মেসমারিজম কি?
মেসমেরিজম, যা মেসমারাইজেশন বা প্রাণী চুম্বকত্ব নামেও পরিচিত। এটি ছিল ১৮ শতকের শেষের দিকে ফ্রাঞ্জ অ্যান্টন মেসমার দ্বারা বিকশিত একটি থেরাপিউটিক অনুশীলন।
মেসমারিজম:
মেসমার (Mesmer) প্যারাসেলসাসের মতবাদ দ্বারা প্রভাবিত হয়ে তিনি নিজস্ব এক মতবাদ প্রকাশ করেন। তাঁর মতবাদটি প্রাণী চুম্বকত্ব (Animal Magnetism) নামে খ্যাত। মেসমার বিশ্বাস করতেন যে, জীবিত প্রাণীর মধ্যে প্রাকৃতিক চৌম্বকীয় শক্তিময় তরল রয়েছে যা তার চারপাশে প্রবাহিত হয় এবং এই তরলে ভারসাম্যহীনতা অসুস্থতার কারণ হতে পারে। তিনি দাবি করেছিলেন যে তিনি এই চৌম্বকীয় তরলটি বিভিন্ন শারীরিক এবং মানসিক অসুস্থতার চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করতে পারেন। মেসমার তাঁর মতবাদটি প্রচার করতে গিয়ে বিভিন্ন মানসিক রোগীর চিকিৎসা করেন; তাতে অনেক মানসিক রোগী তাদের রোগ থেকে মুক্তি পায়। তিনি যে চিকিৎসা-পদ্ধতির সাহায্যে মানসিক রোগ নিরাময় করতেন, সেই পদ্ধতির নাম হলো মেসমারিজম (Mesmerism)। এই পদ্ধতিটি মানসিক রোগ চিকিৎসা জগতে খুব প্রসিদ্ধি লাভ করে। মেসমারিজমের প্রত্যক্ষ ফল হলো সম্মোহন প্রণালি বা Hypnotism..।
মেসমেরিজম ১৮ শতকের শেষের দিকে এবং ১৯ শতকের গোড়ার দিকে জনপ্রিয়তা লাভ করে, কিছু ব্যক্তি মেসমেরিক চিকিৎসার পর তাদের স্বাস্থ্যের উন্নতির রিপোর্ট করে। তবে, এটিও সংশয় ও বিতর্কের মুখোমুখি হয়েছিল। সমালোচকরা যুক্তি দিয়েছিলেন যে মেসমেরিজমে অন্তর্নিহিত চৌম্বক শক্তির পরিবর্তে বিশ্বাসের শক্তি এবং প্লাসিবো প্রভাবকে দায়ী করা যেতে পারে।
উপসংহার:
১৯ শতকের গোড়ার দিকে, মেসমেরিজমের উপর ভিত্তি করে সম্মোহন থেরাপির উদ্ভব ঘটে। ইংল্যান্ডের চিকিৎসক জেমস্ ব্রেইড, ফরাসি চিকিৎসক লাইবো ও বারনহাইম বিশেষভাবে সম্মোহন সম্বন্ধে আগ্রহী হন এবং তাঁরা মনে করেন যে, সম্মোহনের ক্ষেত্রে যে সুফল আসে তার পেছনে ভিত্তি হিসেবে কাজ করে মেসমারিজম।