অবাধ অনুষঙ্গ পদ্ধতি কি?

মনঃসমীক্ষণ চিকিৎসায় মূলত রোগীর ছোটোবেলার Psychosexual বিকাশজনিত সমস্যা থেকে উদ্ভূত অবদমিত স্মৃতি, চিন্তা, ভীতি ও দ্বন্দ্ব উদ্ঘাটন করে বয়ঃপ্রাপ্ত বাস্তবতায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হয়। মনঃসমীক্ষণ থেরাপির একটি প্রধান কৌশল হলো অবাধ অনুষঙ্গ (Free association method)। নিম্নে অবাধ অনুষঙ্গ বর্ণনা করা হলো-

অবাধ অনুষঙ্গ পদ্ধতি: 

প্রথম দিকে Unconscious mind-কে উদ্ঘাটন করার লক্ষ্যে ফ্রয়েড Hypnotherapy ব্যবহার করেন। পরে তিনি অনুধাবন করেন এই পদ্ধতিতে রোগী অস্থায়ীভাবে আরোগ্য লাভ করে এবং ১৮৯৮ সালে তাঁর বিখ্যাত কৌশল 'অবাধ অনুষঙ্গ পদ্ধতি' উদ্ভাবন করেন। সংবেদনমূলক চিকিৎসাতে (Hypnotherapy) তন্দ্রাচ্ছন্ন অবস্থায় রোগীর 'Unconscious mind'-কে উদ্ঘাটন করা হতো কিন্তু অবাধ অনুষঙ্গ পদ্ধতিতে রোগীকে সম্পূর্ণ জাগ্রত ও স্বাভাবিক অবস্থায় অবচেতন মনের (Unconscious mind) তথ্যসমূহ উদ্ঘাটন করা হয়। এটি রোগীর অবদমিত চিন্তন ও ভীতি সম্পর্কে জানার একটি প্রত্যক্ষ পদ্ধতি। সাধারণত এই পদ্ধতিতে রোগীকে আরামে বসতে অথবা শুয়ে থাকতে বলা হয় এবং সেই মুহূর্তে তার মনে যা আসে তা যত ব্যক্তিগত বা বেদনাদায়ক কিংবা প্রাসঙ্গিক বা অপ্রাসঙ্গিক হোক না কেন নির্দ্বিধায় বর্ণনা করতে বলা হয়। ফ্রয়েডের মতে চেতনস্তর মনের অপেক্ষাকৃত একটি ক্ষুদ্র অংশ। মনের বেশির ভাগই অচেতন স্তরে নিমজ্জিত থাকে। রোগীর অচেতন স্তরের প্রেষণা ও দ্বন্দ্বসমূহকে উদ্ঘাটন করাই অবাধ অনুষঙ্গ পদ্ধতির মূল উদ্দেশ্য। রোগীর দীর্ঘদিনের অবদমিত অনুভূতিগুলো সম্পর্কে তাদের সচেতন করে তোলা ও সেগুলো অনুধাবনে সাহায্য করাই চিকিৎসকদের প্রধান কাজ। চিকিৎসকের প্রভাব যেন রোগীর অনুষঙ্গকে প্রভাবিত করতে না পারে সেজন্যে অবাধ অনুষঙ্গের অধিবেশনে চিকিৎসক রোগীর পেছনে বসেন।

উপসংহার: 

মনঃসমীক্ষণ থেরাপির মাধ্যমে ব্যক্তির Conscious ego-কে শক্তিশালী করে তোলা হয়। ফলে ব্যক্তি নিজে নিজের উপর Ego-র নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায় এবং Reality principle মেনে নিয়ে স্বাভাবিক পথে পরিচালিত হতে পারে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url