একটি উত্তম নমুনা নকশার বৈশিষ্ট্যসমূহ

নমুনায়নের মাধ্যমে তথাবিশ্বের একটি প্রতিনিধিত্বমূলক নমুনা নির্বাচন করা হয় এবং সেই নির্বাচিত নমুনা থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। নিম্নে একটি ভালো নমুনার বৈশিষ্ট্য আলোচনা করা হলো-

উত্তম নমুনা নকশার বৈশিষ্ট্য

নমুনা চয়নের প্রক্রিয়াই নমুনায়ন। নমুনায়নের মূল উদ্দেশ্য যে নমুনায়ন পদ্ধতির মাধ্যমে অর্জিত হয় তাকে উত্তম বা আদর্শ নমুনায়ন বলে। সমগ্রকের মানের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে এমন নমুনাকে কেউ কেউ উত্তম নমুনা হিসেবে চিহ্নিত করেন। এ রকম আরো দু একটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে যার সাহায্যে একটি উত্তম নমুনা চিহ্নিত করা সম্ভব।

১. প্রতিনিধিত্বশীলতা (Represcentativeness): 

একটি উত্তম নমুনা সমগ্রকের প্রতিনিধিত্ব করবে। নমুনা, সমগ্রকের প্রতিনিধিত্বশীল না হলে তা সমগ্রক মান সম্পর্কে যথাযর্থ সিদ্ধান্ত দিতে ব্যর্থ হয়। তাই নমুনা এমন হওয়া উচিত যাতে সমগ্রকের বৈশিষ্ট্যসমূহ পাওয়া যাবে।

২. সমসত্ত্বতা (Uniformness): 

একটি আদর্শ নমুনার এককসমূহের মধ্যে সমরূপতা থাকতে হবে। অর্থাৎ, নমুনায় অন্তর্ভুক্ত  এককসমূহ সমপ্রকৃতির হবে। সমসত্ত্বতা একটি উত্তম নমুনার অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য।

৩. পক্ষপাতহীনতা (Unbiasness): 

পক্ষপাতহীনতা আদর্শ নমুনার একটি বৈশিষ্ট্য। পক্ষপাতদৃষ্ট নমুনা সমগ্রকের প্রতিনিধিত্ব করে না। তাই গবেষককে নমুনায়নের সময় বৈর্ব্যক্তিক হতে হবে।

৪. পর্যাপ্ততা (Adequateness): 

একটি ভাল নমুনায় পর্যাপ্ত সংখ্যক একক অন্তর্ভুক্ত হবে। নমুনা এককের সংখ্যা খুব বেশি বা খুব কম হওয়া বাঞ্ছনীয় নয়। সমগ্রকের অন্তর্ভুক্ত মোট এককের পরিমাণ, গবেষণার ধরন, সময়, কর্মী ও অর্থ ইত্যাদি বিবেচনা করে নমুনা এককের সংখ্যা নির্ধারণ করতে হয়। মোট কথা, সমগ্রকের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে এমন পরিমাণ নমুনা বাছাই করতে হবে।

৫. সঠিকতা বা ভ্রমশূন্যতা (Precision): 

আদর্শ নমুনা অবশ্যই এরূপ হবে যা থেকে নমুনা ভ্রান্তি পরিমাপ করা সম্ভব। আদর্শ বা প্রমিত ভ্রান্তির দ্বারা নমুনার সঠিকতা পরিমাপ করা হয়। প্রমিত ভ্রান্তি যত কম হবে এ নমুনার যথার্থতা বা সঠিকতা তত বেশি হবে।

৬. স্বাভাবিকতা (Normality): 

স্বাভাবিকতা উত্তম নমুনার অপর একটি বৈশিষ্ট্য। স্বাভাবিকতার অর্থ হচ্ছে সমগ্রকের প্রতিটি উপাদানই নমুনায় অন্তর্ভুক্ত হবার সুযোগ ও স্বাধীনতা পাবে। এককসমূহকে পরস্পর পরিবর্তন করা যাবে; এককসমূহ স্বতন্ত্র বা স্বাধীন হবে-অর্থাৎ নমনীয়তা উত্তম নমুনায়নের মধ্যে থাকবে।

উপসংহার: 

একটি গবেষণার সমগ্রক ক্ষুদ্র বা ব্যাপক যাই হোক না কেন, তথ্য সংগ্রহের প্রয়োজনীয় উপাদানের (সময়, মাপক, অর্থ শ্রম, যন্ত্রপাতি ইত্যাদি) সীমাবদ্ধতার কারণে তথ্য বিশ্বের প্রতিটি ক্ষেত্র থেকে তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব হয় না। সে কারণেই গোটা তথ্যবিশ্বকে প্রতিনিধিত্ব করে এমন ছোট অংশ থেকে তথ্য/উপাত্ত সংগ্রহ করতে হয়। আর গোটা তথ্যবিশ্বের প্রতিনিধিত্বশীল যথার্থ (Valid), নির্ভরযোগ্য (Reliable) এবং ব্যক্তিগত প্রভাবমুক্ত নমুনা নির্বাচন করাই হচ্ছে নমুনায়ন প্রক্রিয়ার প্রকৃত উদ্দেশ্য।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url