রেটিনার গঠন ও কার্যাবলী

মানুষের পাঁচটি ইন্দ্রিয়ের মধ্যে চোখ একটি গুরুত্বপূর্ণ ইন্দ্রিয়। চোখের একটি প্রধান অংশ হচ্ছে রেটিনা। অক্ষিপটের প্রাচীর যে তিনটি স্তরে বিভক্ত তার মধ্যে সবচেয়ে ভেতরের স্তর হচ্ছে রেটিনা বঝ অক্ষিপট। এটি চক্ষুতে মস্তিষ্কের দূত হিসেবে কাজ করে।

রেটিনার গঠন: অক্ষিগোলকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো রেটিনা। এটা আলোর প্রতি সংবেদনশীল। রেটিনার গঠন বেশ জটিল। এর কয়েকটি স্তর রয়েছে। উপরের স্তরে শঙ্কু ও দণ্ড নামে দুই ধরনের আলোক সংবেদী কোষ রয়েছে। শম্ভুগুলো দেখতে চূড়ার মতো এবং দণ্ডগুলো দেখতে দণ্ডের মতো লম্বা। আমাদের প্রতিটি চোখে প্রায় ৭ মিলিয়ন শঙ্কু এবং ১২০ মিলিয়ন দণ্ড রয়েছে।

১. প্রথম স্তর: প্রথম স্তর অসংখ্য আলোক সংবেদী কোষ নিয়ে গঠিত। রেটিনাতে প্রায় ১২৭ মিলিয়ন আলোকে সংবেদী কোষ রয়েছে। এ কোষসমূহের কাজ হলো আলোকশক্তিকে স্নায়ুতন্ত্রের তড়িৎ-রাসায়নিক ভাষায় রূপান্তর করা। এ কোষগুলোতে ফটোপিগমেন্ট রয়েছে যা আলোর সাথে রাসায়নিক বিক্রিয়া করে।

২. দ্বিতীয় স্তর: রেটিনার দ্বিতীয় স্তরে রয়েছে দ্বিমুখী কোষ। রেটিনার প্রথম স্তরের আলোক সংবেদী কোষে সৃষ্ট স্নায়ুবিক সংকেতসমূহ দ্বিমুখী কোষের মধ্য দিয়ে গ্যাংলিয়ন কোষে পৌঁছে।

৩. তৃতীয় স্তর: রেটিনার তৃতীয় স্তর গ্যাংলিয়ন কোষ নিয়ে গঠিত। এ কোষগুলো দ্বিমুখী কোষ থেকে স্নায়ুবিক সংকেতসমূহ গ্রহণ করে। 

রেটিনার আরও তিনটি অংশ রয়েছে। 

যথা: পীতবিন্দু, অন্ধবিন্দু, ঘন জলের ভাণ্ডার। 

ক. পীতবিন্দু: রেটিনার সবচেয়ে সংবেদনশীল অঞ্চলকে বলা হয় পীতবিন্দু। এ পীতবিন্দু হলো স্পষ্টতম দর্শনের অংশ।

খ. অন্ধবিন্দু: রেটিনার যে বিন্দু থেকে দর্শনগত স্নায়ু নির্গত হয় সেখানে কোনো দণ্ড বা শঙ্কু নেই বলে আলোক সংবেদন হয় না। একে বলে অন্ধবিন্দু। 

গ. ঘন জলের ভাণ্ডার: লেন্স এবং রেটিনার মধ্যবর্তী স্বচ্ছ ও ঘন তরল পদার্থকে ঘন জলের ভাণ্ডার বলে। এটা অস্বচ্ছ জলের ভাণ্ডার।

উপসংহার: রেটিনা চোখের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ; যা মানুষের দর্শনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url