বিবর্তনবাদের দুটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা : প্রাকৃতিক নির্বাচন ও পরিবৃত্তি

বিবর্তন হলো এমন একটি জীববৈজ্ঞানিক ধারণা যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে জীবের গাঠনিক ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের ক্রমপরিবর্তনকে বুঝায়। কোনো জীবের বংশধরদের মাঝে যে জিনরাশি ছড়িয়ে পড়ে তারাই বংশপ্রবাহে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য সৃষ্টি করে।

ইংরেজ প্রকৃতি বিজ্ঞানী চার্লস রবার্ট ডারউইন ১৮৫৯ সনে 'Orgin Of Species' গ্রন্থে জীবের সৃষ্টি ও বিবর্তন সম্বন্ধে একটি বৈপ্লবিক মতবাদ উপস্থাপন করেন। এই মতবাদটি বিবর্তনবাদ বা প্রাকৃতিক নির্বাচন মতবাদ নামে পরিচিত।  

নিম্নে বিবর্তনবাদের দুটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা তুলে ধরা হলো-

প্রাকৃতিক নির্বাচনঃ 

অনুকূল পরিবৃত্তি সম্পন্ন জীবকে প্রকৃতি নির্বাচন ও লালন পালন করে। অনুকূল পরিবৃত্তি সম্পন্ন জীব সহজে পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়াতে পারে এবং অযোগ্যদের তুলনায় বেশি হারে বংশ বিস্তার করতে পারে। এসব বংশধরদের মধ্যে যাদের অনুকূল পরিবৃত্তি বেশি থাকে প্রকৃতি পুনরায় তাদের নির্বাচন করে। এভাবে যুগযুগ ধরে নির্বাচন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রকৃতি জীবের নতুন প্রজাতি সৃষ্টি করে। 

জীবের ডিএনএ-তে জিনের দৈব-পরিবর্তনে বেঁচে থাকার জন্য সহায়ক উন্নত জিনটিকে নির্বাচন করার প্রক্রিয়াটিকে বলে প্রাকৃতিক নির্বাচন।

পরিবৃত্তিঃ 

একই রকম সকল প্রজাতির সকল প্রাণী হুবহু একই রকম হয় না। একে পরিবৃত্তি বলে। ডারউনের মতে অবিরাম সংগ্রামের ফলে জীবের শারীরিক পরিবর্তন ঘটার কারণে পরিবৃত্তির উদ্ভব হয় এবং তা বংশানুক্রমে পরিচালিত হয়ে জীবের প্রতিষ্ঠিত বৈশিষ্ট্য হিসাবে দেখা দেয়। 

পরিবৃত্তি দুই প্রকার। যথাঃ অনুকূল পরিবৃত্তি এবং প্রতিকূল পরিবৃত্তি। 

যেসব পরিবৃত্তি জীবকে পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়াতে সহায়তা করে তাকে অনুকূল পরিবৃত্তি বলে। 

অন্যদিকে, যেসব পরিবৃত্তি জীবকে খাপ খাওয়াতে সহায়তা করে না বরং টিকে থাকতে বাধা প্রদান করে সেসব বৈশিষ্ট্যকে প্রতিকূল পরিবৃত্তি বলে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url