মানসিক প্রতিবন্ধিতা এবং অটিজমের মধ্যে পার্থক্য
মানসিক প্রতিবন্ধকতা (MR) এবং অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার (ASD) উভয়ই বিকাশমূলক ব্যাধি যা একজন ব্যক্তির জ্ঞানীয়, সামাজিক এবং মানসিক কার্যক্ষমতাকে প্রভাবিত করতে পারে। তবে মানসিক প্রতিবন্ধিতা ও অটিজমের মধ্যে কিছু মূল পার্থক্য রয়েছে —
মানসিক প্রতিবন্ধিতা
১. মানসিক প্রতিবন্ধিকতা হলো বিঘ্নিত ক্রমবিকাশের জন্য ব্যক্তির বুদ্ধিবৃত্তিমূলক কাজে গড়ের চেয়ে কম দক্ষতা, যার ফলে তার উপযোজনমূলক আচরণ ব্যাহত হয়।
২. মানসিক প্রতিবন্ধিতা একটি উল্লেখযোগ্য বৌদ্ধিক অক্ষমতা যার অর্থ হলো একজন ব্যক্তির আইকিউ ৭০ এর নিচে। এটি একজন ব্যক্তির শেখার, যুক্তি এবং সমস্যা সমাধান করার ক্ষমতাকে প্রভাবিত করতে পারে।
৩. মানসিক প্রতিবন্ধিতার সাথে অন্যান্য অক্ষমতাও হতে পারে, যেমন শারীরিক প্রতিবন্ধকতা, সংবেদনশীল দুর্বলতা বা আচরণগত সমস্যা।
৪. জন্মগত ব্যাধি, জন্মগত ত্রুটি এবং বিষাক্ত পদার্থের সংস্পর্শে আসার মতো পরিবেশগত কারণসহ বিভিন্ন কারণে শিশু মানসিক প্রতিবন্ধী হতে পারে।
৫. অনেক ক্ষেত্রে জন্মের পরপরই প্রতিবন্ধিতা প্রকাশ পায়। কিছু ক্ষেত্রে ৩-৫ বছর বয়সে প্রতিবন্ধিতা প্রকাশ পায়।
অটিজম
১. অটিজম হলো কেন্দ্রীয় স্নায়বিক প্রণালিতে গঠনগত ও ক্রিয়াগত ত্রুটি যা মস্তিষ্কের ক্রিয়াকে ব্যাহত করে এবং শিশুর সার্বিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি করে।
২. অটিজম বৈকল্যের পূর্ণনাম হলো একটি স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার। এএসডি আক্রান্ত ব্যক্তিদের সামাজিক মিথষ্ক্রিয়া এবং যোগাযোগে অসুবিধা হয় এবং তাদের মধ্যে সীমাবদ্ধ বা পুনরাবৃত্তিমূলক আগ্রহ এবং আচরণ দেখা যায়। ASD সব ক্ষেত্রে বুদ্ধিবৃত্তিক অক্ষমতার সাথে যুক্ত নয়।
৩. মানসিক প্রতিবন্ধিতা এবং অটিজম পারস্পরিক স্বতন্ত্র নয়। কোনো কোনো রোগীর মধ্যে দুইটি ব্যাধির শর্ত থাকা সম্ভব। প্রকৃতপক্ষে, কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে ASD-এ আক্রান্ত ৭০% পর্যন্ত মানুষের কিছু ডিগ্রি এমআর রয়েছে।
৪. অটিজম জেনেটিক এবং পরিবেশগত কারণের সংমিশ্রণ দ্বারা হয়।
৫. জন্মের পর বিশেষ করে ৩ বছরের মধ্যেই অটিজমের লক্ষণ চোখে পড়ে বা প্রকাশ পায়।
পরিশেষে বলা যায় যে, এমআর বা এএসডি-এর জন্য কোনো নিরাময় নেই। তবে এমন প্রতিকারমূলক কার্যক্রম রয়েছে যা এই অবস্থার লোকেদের স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে সহায়তা করে। প্রাথমিক হস্তক্ষেপ এমআর এবং এএসডি উভয়ের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি একজন ব্যক্তির বিকাশকে উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।