মনোবিজ্ঞানের সহ-সম্পর্কমূলক অনুধ্যান
মনোবিজ্ঞানের সহ-সম্পর্কমূলক অনুধ্যান (Correlational Studies of Psychology)
এটা একটা বিশেষ ধরণের পদ্ধতি। কোন কোন সময় গবেষক দুটো আচরণমূলক চলের মধ্যে কিরূপ সম্পর্ক আছে তা পর্যবেক্ষণ করেন। যেমন বুদ্ধির সাথে শিক্ষামূলক কাজের সম্পর্ক কেমন তা পরিমাপ করার প্রয়োজন হয়। এর জন্য স্যার ফ্রান্সিজ গ্যালন (Sir Francis Galton) আবিষ্কৃত পরিসংখ্যানের সহ-সম্পর্ক নির্ণয় কৌশল ব্যবহার করা হয়। এতে গণিতের কিছু প্রাথমিক নিয়ম-কানুন জানার প্রয়োজন হয়। বিষয়টি কারও কারও কাছে জটিল মনে হলেও মোটেও কঠিন নয়। এর সাহায্যে দুটো চলের সম্পর্কের ক্ষেত্রে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়। Ehrlich (1975) আমেরিকার বিভিন্ন অঙ্গ রাষ্ট্রে অপরাধের ওপর আইনের কঠোরতার প্রভাব পর্যবেক্ষণ করেন। প্রথমে তিনি প্রতিটি রাষ্ট্রে বিভিন্ন ধরনের অপরাধের জন্য কিরূপ কঠোর শাস্তি দেয়া হয় তা নির্ধারণ করেন। তারপর FBI-এর কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের অপরাধের পরিসংখ্যান নেন এবং উভয়ের মধ্যে সহ-সম্পর্ক নির্ণয় করেন। এতে দেখা যায় যেসব অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ড ও অন্যান্য কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে সে ধরনের অপরাধের সংখ্যা অনেক কম। এ থেকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় যে আইনের কঠোর শাস্তি বিধান অপরাধের সংখ্যা কমিয়ে আনে।
সহ-সম্পর্ক অনুধ্যান বাস্তবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিবেশন করে। তবে এর প্রধান সমস্যা হল যে দুটো চলের মধ্যে সহ-সম্পর্ক নির্ণয় করা হয় ঐ দুটো চল একই সঙ্গে ঘটে। কিন্তু তাই বলে একটি অন্যটির কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হয় না। আইন কঠোর হলে অপরাধের সংখ্যা কমে যায় বলে আইনের কারণে অপরাধ সংঘটিত হয় না। যেমন আমাদের দেশে আজ দেখা যায় আইনের কঠোর প্রয়োগ সীমান্ত চোরাচালান হ্রাস করে আবার আইনের শিথিলতায় চোরাচালান বৃদ্ধি হয়। তাহলে এর অর্থ এই নয় যে চোরাচালানের জন্য আইনই দায়ী।